নিজস্ব প্রতিবেদক: আসন্ন ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটকে ব্যবসা ও শিল্পবান্ধব করতে আয়কর বিষয়ক ১৯টি, ভ্যাট বিষয়ক ৪০ ও শুল্ক বিষয়ক ৫৫টি প্রস্তাবনা দেন চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীরা। প্রস্তাবনা বিবেচনার আশ্বাস দিয়ে রাজস্ব বোর্ডের সকল কার্যক্রম সহজ ও অনলাইনভিত্তিক করার চেষ্টা করছেন বলে জানিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান।
বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) সকাল ১১টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের কনফারেন্স হলে আয়োজিত প্রাক-বাজেট মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা জানান।
চিটাগং চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজের প্রশাসক মুহাম্মদ আনোয়ার পাশার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন উইমেন চেম্বার, মেট্রোপলিটন চেম্বার, রাঙামাটি ও কক্সবাজার চেম্বারসহ বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধি। এসময় তিনি এনবিআর চেয়ারম্যানের কাছে লিখিত প্রস্তাবনা তুলে দেন।
সভায় চট্টগ্রাম উইমেন চেম্বারের সভাপতি আবিদা সুলতানা বলেন, ‘বর্তমানে দেশের নারীরা প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে ব্যবসাক্ষেত্রে এগিয়ে আসছেন। বাজেটে তাদের দিকে বিশেষ নজর রাখা দরকার। ভ্যাট-ট্যাক্সের ক্ষেত্রেও তাদের বিষয়ে অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত।’
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন চেম্বারের সভাপতি খলিলুর রহমান বলেন, ‘মেশিনারিজের ক্ষেত্রে বড় অঙ্কের ভ্যাট-ট্যাক্স দিতে হচ্ছে। রপ্তানি-আমদানি আরও সহজ করার লক্ষে এটির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া দরকার।’
চট্টগ্রাম চেম্বারের সাবেক সভাপতি সরওয়ার জামাল নিজাম বলেন, ‘বাংলাদেশের এখনও ৫৫ শতাংশ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করে। ভ্যাটকে সহনীয় পর্যায়ে এনে জনসাধারণের যাতে সুবিধা হয় সে ব্যবস্থা নেওয়া হোক। সরাসরি যেসব ট্যাক্স আছে সেগুলো কমিয়ে আনা হোক।’
বিজিএমইএ’র সাবেক প্রথম সভাপতি নাসির উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘অডিটকে কত সহজভাবে করা যায়; সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। এছাড়া চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে এ আলোচনা যাতে আমলে নেওয়া হয়। বিগত বছরগুলোতে আলোচনা হলেও তার প্রতিফলন বাজেটে দেখা যায়নি।’
সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ পান রপ্তানিকারক সমিতির সভাপতি একরামুল করিম, চট্টগ্রাম চেম্বারের সাবেক সহ-সভাপতি এরশাদ উল্লাহ, বেলাল আহমেদ, সাবেক পরিচালক আমজাদ চৌধুরী, রাঙামাটি চেম্বারের সভাপতি মামুনুর রশীদ, কক্সবাজার চেম্বারের সভাপতি আবু মোরশেদ চৌধুরীসহ বিভিন্ন শিল্পগ্রুপের প্রতিনিধিবৃন্দ।
সবার বক্তব্য শেষে এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান বলেন, ‘অনেকগুলো বিষয়ের সঙ্গে আমরা সরাসরি জড়িত না। আমরা বুঝতে পেরেছি বন্ডে সমস্যা আছে। তাই আমরা বন্ড পুরোপুরি স্বয়ংক্রিয় করতে চাচ্ছি। কিন্তু অনেকে অসুবিধার কথা বলে এতে সমর্থন করছে না। সার্টিফিকেট, লাইসেন্স, পারমিট এসব অনলাইনে করার প্রক্রিয়া চলছে। ভ্যাটের অডিট ও ভ্যাটের রিটার্ন সহজ করার জন্য কাজ চলছে।’
তিনি বলেন, ‘ট্যাক্স বাড়াতে না পারলে দেশের উন্নয়নে অংশীদার হওয়া যাবে না। আপনারা যৌক্তিক দাবি দিয়েছেন। বিষয়গুলো অবশ্যই বিবেচনা করা হবে। বাজেট প্রণয়নে এ সুপারিশ দেওয়া হবে। তবে আমরা এখন রাজস্ব আহরণের বিষয়ে জোর দিচ্ছি। এরমধ্যে কর ফাঁকির বিষয়টি আমাদের প্রধান প্রায়োরিটি।’
Leave a Reply